শিরোনাম:
“আলোকিত সমাজ শিক্ষা ফাউন্ডেশন”-এর উদ্যোগে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা সুনামগঞ্জে মাদকবিরোধী অভিযানে ৫৫ বোতল ভারতীয় মদসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক এইচ এম পি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র কল্যাণ পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত সুনামগঞ্জে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিষয়ক লেকচার ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত শতকোটি টাকার বালুমহাল: ইজারা নিয়ে সুনামগঞ্জে বিএনপির দুইপক্ষের দ্বন্দ্ব, ডিবি তুলে নিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ সংবাদ প্রকাশের জেরে তাহিরপুরে সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ফ্যাসিবাদবিরোধী কণ্ঠ থেকে কেন্দ্রীয় সংগঠক—ইমনদ্দোজার নতুন রাজনৈতিক সূচনা নির্মাণাধীন সেতুর পাশে সিমেন্টবোঝাই ট্রলির চাপায় প্রাণ গেল চালকের বাঁশখালীর আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত সুনামগঞ্জে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দাবিতে মানববন্ধন যাদুকাটায় বিআইডাব্লিউটি’র নামে শ্রমিকদের মারধর করে চাঁদাবাজি প্রতিবাদে মানববন্ধন

সুনামগঞ্জে মামলার পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে, আত্মগোপনে শীর্ষ নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার:

গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলার পর জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন। মামলায় যেসব প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ রয়েছে, তাদের অনেকেই এখন ‘অনুপস্থিত’—কেউ ফোন বন্ধ রেখে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আছেন, কেউ বা এলাকা ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আত্মগোপনে থাকা উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন:সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট,সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন,
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন রতন,জেলা নেতা রণজিত সরকার,
সাবেক পৌর মেয়র নাদের বখত,সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল,ছাত্রলীগ সভাপতি দীপংকর কান্তি দে ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রিপন।

এ ছাড়া আত্মগোপনে থাকা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন,জেলা যুবলীগ নেতা মঞ্জুর আহমদ খন্দকার, শংকর চন্দ্র দাস, রেজাউল আলম নিক্কু, আবুল কালাম, এহসান উজ্জ্বল, অমল কর, প্রদীপ রায়, রিগ্যান, আপ্তাব উদ্দিন, কুদ্দুস ওরফে বেল কদ্দুস, ফরিদ আহমদ ইমন, সুয়েব আহমদ চৌধুরী, জুবের আহমদ অপু, আলামিন রহমান, ফজলে রাব্বী স্মরণ, সজীব রঞ্জন দাশ সল্টু, লিখন আহমদ, জিসান এনায়েত রেজা, আহসান জামিল আনাস, লুৎফুর রহমান লিটন, জহির আলী, রঞ্জিত চৌধুরী রাজন, জনি হোসেন, হাসানুজ্জামান ইস্পাহানী, ফজলুল হক, ফরহাদ। ছাত্রলীগ নেতাদের মাঝে তাফসিরুল ইসলাম,মাজেদুল ইসলাম,শাহারিয়ার নুর নিহান, সাজন আহমদ, আবিদুর রহমান তারেক, নীরব, মেহের, আনোয়ার মিয়া আনু, হাসনাত হোসাইন, মো. পারভেজ হোসেন ফাহিম, সুহেল আহমদ, মোস্তাক আহমেদ, জমিরুল ইসলাম পৌরব, তুষার,তানিম মিয়া,অয়ন, মুসাহিদ, শিমন চৌধুরী, জিকির আলী, ইকবাল হোসেন, লিটন, কাউসার,রাহাত প্রমুখ।

অজ্ঞাত আসামি আতঙ্কে তৃণমূল স্তরেও চুপচাপ

মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—এই বিষয়টি তৃণমূল ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ভিডিও ফুটেজ বা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ব্যবহার করে ভবিষ্যতে তাদের নাম যুক্ত হতে পারে। এ কারণে অনেক কর্মী নিজেদের নাম সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।

‘এটা আত্মগোপন নয়, পরিস্থিতি বুঝে চলা’ — আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যাখ্যা

তবে দলের একাধিক নেতা দাবি করছেন, ‘আত্মগোপন’ নয় বরং এটি হচ্ছে পরিস্থিতি বিবেচনায় সতর্ক থাকা। কেউ কেউ বলছেন, মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আইনি পরামর্শে তারা কয়েকদিন প্রচারবিমুখ আছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যা বলছেন:
সুনামগঞ্জের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মামলার রেশ দীর্ঘমেয়াদি হবে। নামমাত্র বিচারের পরিবর্তে রাজনৈতিক পাল্টা আঘাত আসতে পারে, ফলে অনেকেই আগেভাগেই ‘নিরাপদ দূরত্বে’ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন বলেন,“মামলাটি আদালতের বিচারাধীন বিষয়। তাই এই বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের কোনো মন্তব্য নেই। তবে কেউ যদি আইন নিজের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করে কিংবা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার মতো কোনো পদক্ষেপ নেয়, সে যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া নিরপেক্ষভাবে চলবে এবং সত্য উদঘাটনে পুলিশ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।”