প্রতিনিধিঃতাহিরপুর
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় আগাম পাহাড়ি ঢলের পানি থেকে ফসল হয়নি হওয়ার হাত থেকে রাক্ষায় একযুগ পূর্বে সমশার হাওরের বৈঠাখালি বাধে স্থাপন করা সুইজ গেট গত ১০ বছর ধরে দুর্ভোগের কারণ ও গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়ে আছে হাওর পাড়ের ২ হাজার কৃষক পরিবারের। সুইচ গেটটি স্থাপনের পর থেকেই সমশার হাওরের ফসল রক্ষায় কোন কাজে আসছে না এমনটাই বলছেন স্থানীয় কৃষকেরা। যার ফলে সমশার হাওর পাড়ের ১৫ গ্রামের প্রায় ২ হাজার কৃষক পরিবার প্রতিবছরই থাকেন তাদের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আর দুর্ভোগে।
এর প্রতিকার চেয়ে এবং সুইচ গেট দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করে সমশার হাওর পাড়ের ভুক্তভোগ কৃষক পরিবার গুলো ।
আজ ১০ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন কলাগাওঁ বাজারে মানববন্ধনটি করেন সামশার হাওরের সকল কৃষকবৃন্দ।
এ সময় মানববন্ধনে কৃষক মোর্শেদ আলম সাদ্দাম বলেন, সমশার হাওরের বৈঠাখালী নামক স্থানে সুইচ সুইস গেট স্থাপন করার পর থেকেই সুইচ গেট হলেও নাই সুইচ। সুইচ গেটের ১০ টি কপাটের মধ্যে স্থাপনের পর থেই ৫ কপাট অকেজো। ফসল রক্ষায় সরকার লাখ লাখ টাকা খরচ করে সুইচ গেট স্থাপন করলেও একযুগ ধরে এটি কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়ে আছে। সমশার হাওর পাড়ের ১৪/১৫ টি গ্রামের প্রায় ২ হাজার কৃষক পরিবারের ১৩ শত ৭০ হেক্টর আবাদি জমি আছে। এই হাওর ইসিআই ( ওয়াল্ড হেরিটেজ রামসার সাইট) এলাকা হওয়ায় বরাবরই এই হাওরের কোন হাওর রক্ষা বাঁধ(পি আই সি) থাকেনা। সুইচ গেট অকেজো থাকার কারণে ১৫/১৭ সালে দুই বার বোরো ফসল পাহাড়ি ঢলে হারিয়ে আমার নিঃস্ব হেয়ে যাই।
প্রতিবছরই সংবাদ মাধ্যমে এই সুইচ গেইটের সমস্যা নিয়ে সংবাদ প্রচার হইলে উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরে উপজেলা প্রশাসন এই সুইচ গেট সংস্কার করা আশ্বাস দিয়ে আসলেও বছরের পর বছর চলে গেলেও এর কোন প্রতিকার পাইনা আমরা। পরে পানির সময় সাময়িক কিছু বরাদ্দ দিয়ে সুইচ গেটের অকেজো ৫ টি পাটের মধ্যে বস্তায় মাটি দিয়ে পানি আটকানো ব্যবস্থা করে দেয়। এই দুর্ভাগা থেকে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা শতশত কৃষক পরিবার আজ রাস্তা দাড়িয়েছি। এই সুইচ গেট দ্রুত সংস্কার করে আমাদের দুর্ভোগ আর দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, কৃষক লায়েছ মিয়া, হাবিবুর রহমান হবি, লাল মিয়া, আনোয়ার হোসেন, নিজাম উদ্দিন, মনুর উদ্দিন, সুহাব হোসেন, সঞ্জু মিয়া প্রমুখ।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, আমি বিষয়টি এর আগেও জেনেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তার সাথে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে অতিদ্রুতই এই সুইচ গেট সংস্কার করা হবে।