কামাল হোসেন, তাহিরপুর::
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুরের যাদুকাটা বালুমহালে দুর্বৃত্তদের বাঁধার মুখে রয়্যালটি ও ফাজিলপুর নৌকাঘাটে টোল আদায় বন্ধ থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার যাদুকাটা বালুমহাল-১ এর ইজারাদার মো. রতন মিয়া স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ করেন। পাশাপাশি তিনি দুর্বৃত্তদের এমন দৌরাত্ম বন্ধে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে যাদুকাটা নদীর মিয়ারচর এলাকায় গিয়ে কোনোপ্রকার বালুবাহী নৌকা চলাচল করতে দেখা যায়নি। তাছাড়া আনোয়ারপুর ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় বালু পরিবহনকারী অর্ধশতাধিক ভলগেট নৌকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
যাদুকাটা বালুমহালে-১ এর ইজারাদার মো. রতন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর পরই স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষীমহল নদীর ফাজিলপুর এলাকায় রয়্যালটি আদায়ের অফিসঘরে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসে যেন রয়্যালিটি আদায় থেকে আমরা বিরত থাকি। পরে নিরাপত্তার অভাবে অফিসটি স্থানান্তর করে মিয়ারচর এলাকায় নিয়ে আসি। কিন্তু এখন পর্যন্ত রয়্যালটি আদায় কার্যক্রম চালাতে পারছিনা। শুরুতে চক্রটি নদীতে দলবল নিয়ে এসে ঘোষণা করে, যাদুকাটা নদীতে বালুবাহী নৌকার রয়্যালিটি ফ্রি। ইজারাদারকে কোনোপ্রকার রয়্যালটি দিবেন না। পরবর্তীতে চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ভলগেট নৌকা আনোয়ারপুর এলাকায় আটক করে রাখে। নদীতে বালুবাহী কোনোপ্রকার নৌকা চলতে দিচ্ছে না।
এদিকে একই অভিযোগ উঠেছে, যাদুকাটা নদীর ফাজিলপুর নৌকাঘাটে টোল আদায়েও। ইজারাদার কতৃপক্ষ বলছেন, আনোয়ারপুর ও বালিজুরী এলাকার দুর্বৃত্তরা টোল আদায়ে বাঁধা দিচ্ছে। গত মঙ্গলবার তারা অস্ত্রসস্ত্রসহ আমাদের উপর হামলা করতে আসে। টোল আদায়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গেছে। এখন এই সন্ত্রাসী চক্রটি আনোয়ারপুর ব্রিজ এলাকায় শত শত ভলগেট নৌকা জোরপূর্বক আটক করে রেখেছে।
যাদুকাটা বালুমহাল-১ এর ইজারাদার মো. রতন মিয়া বলেন, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এলাকার কিছু অসাধু মানুষ আমার এই বৈধ ব্যবসায় জোরপূর্বক ভাগ বসাতে হুমকি দিচ্ছে। তাদের এই অন্যায় আবদারে রাজি না হওয়ায় চক্রটি এখন বালুপরিবহনকারী কোনো ভলগেট নৌকা নদীতে ঢুকতে দিচ্ছে না। তাদের এসব অপকর্মের কারণে নদীতে হাজার হাজার শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বেকার হয়ে পড়েছে।
এ নিয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, থানা পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তরা এ সুযোগটি নিয়েছে। আমি ইউএনওকে বলে দিয়েছি, এ ব্যপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।
প্রসঙ্গত, ১৪৩১ বাংলা সনে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক যাদুকাটা বালুমহাল-১ এর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রতন মিয়া এবং যাদুকাটা-২ বালুমহালের সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন মেসার্স রিয়ান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মুজিবুর রহমান।